বাংলা সাহিত্য জগতে সমরেশ বসু এক মহীরুহ। তাঁর ধারালো গদ্য, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গি, শাণিত বিষয়বস্তু নির্বাচন বারবার ছিন্ন  করেছে বাংলা সাহিত্যের পূর্বনির্ধারিত সব ঘেরাটোপকে।। তিনি কালকূট ও ভ্রমর ছদ্মনামেও লেখা প্রকাশ করেছেন। লেখক হিসেবে তাঁর পেশাগত জীবনের সূচনা হয় ১৯৪৬ সালে এবং  তাঁর জীবনের শেষ  পর্যন্ত তিনি সাহিত্য সাধনায় ব্রতী ছিলেন, লেখাকেই তিনি তাঁর পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। এই সময়কাল ভারত তথা বাংলার ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। সমরেশ বসুর সাহিত্য তৎকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের এক প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল ।তাঁর লেখা যেমন সাফল্যের শিরোমণি পেয়েছিল তেমনি বহু তর্ক-বিতর্ক ও সমস্যার মুখোমুখিও  হয়েছিল। তবে সমরেশ বসুর সৃষ্টির সব থেকে বড় হাতিয়ার- মানুষ। এই মানুষের কথাই বারবার ফিরে এসেছে তাঁর লেখায়। এই মানুষদের মাঝেই সমরেশ নিজেকে বারবার খুঁজে নিতে চেয়েছেন, পেরেছেন। আর পেরেছেন বলেই, আজও  তাঁর সাহিত্য সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক।

সমরেশ বসু ডিজিটাল আর্কাইভের উদ্দ্যেশ্য লেখকের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের একটি সর্বাঙ্গীণ ইতিহাস তুলে ধরা। এই আর্কাইভে লেখকের পরিবার-পরিজন, বন্ধু বান্ধবদের থেকে সংগৃহীত বহু আলোকচিত্র, পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র এবং অন্যান্য নথী ডিজিটাইজ করা হয়েছে।এই আর্কাইভে রয়েছে লেখকের জীবনস্মৃতি, তাঁর সম্পূর্ণ গ্রন্থতালিকা এবং তাঁর ওপর গবেষণামূলক লেখালেখি, বই ইত্যাদির একটি বিস্তৃত তালিকা।

ওয়েবসাইটের এই সংগ্রহের নির্বাচিত কিছু অংশ প্রদর্শন করা হয়েছে। সকলেই এই আর্কাইভটি অনলাইনে দেখতে ও পড়তে পারবেন। যাঁরা বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কাজ করছেন বা করবেন, যথা সাহিত্য গবেষক, কোনো লেখকের পরিবারবর্গ বা কোন প্রকাশনা সংস্থা-  তাঁদের সংগ্রহ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে, সমরেশ বসু ডিজিটাল আর্কাইভ তাঁদের উদ্দেশ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চায়, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এই সব সংগ্রহগুলি, আমাদের ভাষা এবং সংস্কৃতির এক জীবন্ত দলিল হয়ে উঠতে পারে